চট্টগ্রামে ওসি, দুই এসআইসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা
চট্টগ্রামে ওসি, দুই এসআইসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা
এম মনির চৌধুরী রানা চট্টগ্রাম
চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদ থানার ওসি ও দুই পুলিশ সদস্য ও সোর্সসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে অন্তসত্ত্বা নারীকে নির্যাতন করে ৩ মাসের ভ্রুণ হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শারমিন আকতার মহানগর দায়রা জজ আদালতে মামলা করেছন। একই অভিযোগ গত ২৫ জানুয়ারি চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ কমিশনারের কাছে ও দেন। মামলায় বায়েজিদ থানার ওসি মো. আরিফুর রহমান, উপ- পরিদর্শক জগৎজ্যোতি দাস, উপ -পরিদর্শক মনিরুল ইসলাম, সরোয়ার প্রকাশ বাবলা, জাবেদ প্রকাশ ভাগিনা জাবেদ ও পুলিশ সোর্স আনিকা ইসলাম মনিকে আসামি করা হয়। মামলার বাদি শারমিন আকতার তামান্না আমান বাজার সিকারপুর সোনা মিয়াঁ সওদাগরের বাড়ির মোহাম্মদ মো. সাজ্জাদের স্ত্রী। সাজ্জাদ পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী। তার বিরুদ্ধেও একাধিক মামলা রয়েছে। মামলায় নির্যাতন এবং হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন ২০১৩ এর ১৫(১)/ ১৫(৩)/ ১৫(৪) অভিযোগ আনা হয়।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, গত ৫ ডিসেম্বর ভোর রাতেশ শারমিন আকতার তামান্নার স্বামী মোহাম্মদ সাজ্জাদকে গ্রেফতারে পুলিশ বাসায় অভিযান চালায়। এসময় পুলিশের সাথে দুই শীর্ষ সন্ত্রাসী সরোয়ার প্রকাশ বাবলা, ১০ মামলার আসামি জাবেদ প্রকাশ ভাগিনা জাবেদও ছিল। অভিযানের সময় পুলিশ তার স্বামীকে না পেয়ে এস আই মনিরুল ইসলাম তার স্ত্রীকে আটক করে। এসময় পুলিশ ও সোর্সরা তাকে শারীরিকভাবে হেনস্তা করে। ভাগিনা জাবেদ পুলিশের সামনে শারমিনকে মারধর করেন।
মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়েছে, থানার ওসি শারমিনকে লাঠি দিয়ে মারধর করেন এবং পুলিশের উপ -পরিদর্শক জগৎজ্যোতি দাস বাদীনির তলপেটে লাথি মারেন। এতে বাদীনি ৩ মাসের অন্তসত্বা মহিলা হওয়ায় নির্যাতনের একপর্যায়ে বাদীনির যৌনাঙ্গ থেকে প্রচুর রক্ত ক্ষরণ হয়। তাকে বিনা চিকিৎসায় থানা হেফাজতে নিয়ে যান। ২৪ ঘন্টার মধ্যে বাদীনিকে আদালতে উপস্থাপন করার বিধান আইনে উল্ল্যেখ থাকলেও এ সময়ের মধ্যে বাদীনিকে উপস্থাপন না করে দুই দিন থানায় অমানবিক ও পৈশাচিক নির্যাতন করা হয়। গত ৬ জানুযারি সন্ধ্যা ৭ টায় অর্থাৎ আটকের দীর্ঘ ৩৯ ঘন্টা পর বিনা চিকিৎসায় তাকে বায়েজিদ থানার ১৩ (১২)২৪, জি আর নং-৪৭৩/২৪ মামলা মূলে আটক দেখিয়ে আদালতে পাঠানো করেন।
শারমিন আকতারের বলেন, শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে ৮ জানুয়ারি আদালত তাকে জামিন দেন। তিনি আরও বলেন, জামিন পেয়ে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হই। নানা পরীক্ষা নিরীক্ষার পর চিকিৎসকরা জানিয়েছেন আমার গর্ভের শিশুর ভ্রুন নষ্ট হয়ে গেছে। শারমিনের অভিযোগ, পুলিশী নির্যাতনে তার গর্ভে থাকা শিশু মারা গেছেন। পুলিশ ও পুলিশের সাথে থাকা দুই শীর্ষ সন্ত্রাসীর নির্যাতনের কথা বলতে গিয়ে শারমিন আকতার কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি বলেন, পুলিশ ও সন্ত্রাসীরা মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছে। আমি এখন অসহায়। বাসায় থাকতে পারছিনা। ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছি। এ ব্যাপারে বায়েজিদ থানার অফিসার ইনচার্জ ( ওসি) মো. আরিফুর রহমানকে ফোন করা হলে তিনি একটি অনুষ্ঠানে রয়েছেন জানিয়ে পরে কথা বলার জন্য বলেন।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Banglar Alo News Admin
কমেন্ট বক্স